প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :
১৯৮৪ সালে ইদিলপুর মহাবিদ্যালয় নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে নাম পরিবর্তন করে শামসুর রহমান ডিগ্রী কলেজ, গোসাইরহাট, শরীয়তপুর নামকরণ করা হয়। শরীয়তপুর জেলার অন্তর্গত গোসাইরহাট উপজেলা একটি পশ্চাৎপদ ও অনুন্নত জনপদ। এখানে শিক্ষা লাভের কোন সুযোগ না থাকায় এলাকার বেশিরভাগ মানুষই নিরক্ষর ও উচ্চ শিক্ষা বঞ্চিত। ১৯৮৪ সালে উপজেলা ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার তাগিদ অনুভব করেন। তৎকালীন উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ এর অনুপ্রেরণায় জনাব জসিম উদ্দিন দেওয়ান, জানাব ডাঃ এ.এস কামাল উদ্দীন আহমেদ, জনাব মোঃ আজহার উদ্দীন হাওলাদার, জনাব শামসুদ্দিন আহমেদ শিকারী(শামসু মাস্টার), এম,এম, আলী আহমেদ, এ্যাডভোকেট জনাব আবুল কাশেম বেপারী, জনাব আব্দুল গণি সরদার, জনাম শামসুর রহমান (শাহজাদা মিয়া), জনাব সাহেদ পারভেজ আব্বাস, জনাব বিএম আব্দুল খালেক প্রমুখ ব্যক্তিবর্গের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে ঐতিহ্যবাহী ইদিলপুর পরগণার নাম অনুসারে ইদিলপুর ইউনিয়নের দাসের জঙ্গল মৌজায় ইদিলপুর মহাবিদ্যালয় নামে অর্থাৎ এইচ এস সি মানের একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ইদিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৮৪ সালের ১লা জুলাই থেকে গোসাইরহাট উপজেলায় ইদিলপুর মহাবিদ্যালয় নামের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এলাকার অবহেলিত জনগণের উচ্চ শিক্ষা লাভের পথ সুগম করে।
প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে ইদিলপুর মহাবিদ্যালয়টি এলাকার দানশীল ব্যক্তিবর্গের সাহায্য—সহযোগিতা, চাঁদা, দান, অনুদানে কোনরকমে তার কার্যক্রম চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে ছাত্র—ছাত্রীর সংখ্যা (প্রায় ৬০) ও দান—অনুদানের পরিমাণ কমে নূন্যতম পর্যায়ে পৌছায়। শিক্ষক—কর্মচারীদের প্রায় ৩ বৎসরের বেতন বকেয়া থাকে। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় এলাকার সচেতন মহলে হতাশা নেমে আসে। জনগন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বড়ই চিন্তিত ও উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েন। তাঁরা প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখার উপায় খুঁজতে থাকেন।
কলেজ গর্ভনিং বডির ২৩/০৮/১৯৯২ ইং তারিখের সভায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক সমস্যার সমাধানকল্পে কলেজ গর্ভনিং বডির সদস্য জনাব সাহেদ পারভেজ আব্বাস প্রস্তাব করেন যে, “যদি কোন দানশীল ব্যক্তি তার নামে কলেজের নামকরণ করতে চান তাহলে বিধি মোতাবেক অর্থ প্রদান করলে উক্ত দাতার নামে কলেজের নামকরণ করে আর্থিক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে”। উক্ত প্রস্তাবে গর্ভনিং বডির সভায় সর্ব—সম্মতিভাবে গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব বি.এম. আবদুল খালেক।
কলেজ গর্ভনিং বডির ০৭/১২/১৯৯২ ইং তারিখের সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাম মোল্লা তবিবুর রহমান সাহেবের উপস্থিতিতে বাবু জিতেন্দ্র চন্দ্র দে এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উক্ত সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয় এবং পুনরায় আর্থিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দানশীল ব্যক্তির নামে কলেজের নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত নং—৪
১৯/০৫/১৯৯৩ ইং তারিখ রোজ : বুধবার সকাল ১০ ঘটিকায় কলেজ গর্ভনিং বডির সভায় গর্ভনিং বডির সভাপতি জাতীয় সংসদ সদস্য (শরীয়তপুর—৩) জনাব আবদুর রাজ্জাক সাহেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জনাব আবু মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান, অধ্যক্ষ ও সদস্য সচিব উপস্থাপন করেন যে, “ইদিলপুর মহাবিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত। যেমন—ছাত্রদের ছাত্রাবাস, শিক্ষকদের আবাসিক সমস্যা, খেলাধূলার মাঠ, চিত্তবিনোদন ও শারীরিক কসরতের কোন ব্যবস্থা না থাকায়, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের স্বল্পতা ইত্যাদি”। এসব প্রতিকূল অবস্থার কারণে ছাত্র—ছাত্রীর সংখ্যা কাম্য সংখ্যায় না থাকায় মহাবিদ্যালয়ের স্বীকৃতি নবায়ন স্থগিত আছে।
উপরে উল্লেখিত সমস্যাবলীর অনুরূপ আরো বহু সমস্যা বিরামান আছে এবং এ সকল সমস্যা সমাধানের জন্য মহাবিদ্যালয়টি উল্লেখযোগ্য কোন আয়ের উৎস নেই। পক্ষান্তরে সরকারের শিক্ষাসংক্রান্ত নীতি ও কৌশল অনুযায়ী অদূর ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটি সরকারীকরণ হলেও বিজ্ঞান বিভাগ ও স্নাতক শ্রেণি (ডিগ্রী) খোলা অনিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা বিরাজমান যা স্থানীয় জনগণের কাছে উচ্চ শিক্ষার দ্বার বন্ধ হওয়ার শামিল।
অধ্যক্ষের উপরোক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পরিষদবর্গ স্পষ্টই ধারণা করতে পারেন যে, মোটা অংকের অর্থ যোগান পেলেই প্রতিষ্ঠানটি সমস্যাগুলোর সমাধান করে স্থানীয় উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত হতে পারে। তাহার জানামতে স্থানীয় বিদ্যা—অনুরাগী জনসাধারণের ঐকান্তিক অনুরোধক্রমে নলমুড়ি ইউনিয়নের জমিদার পরিবারের মরহুম মৌলভী খলিলুর রহমান সাহেবের জ্যেষ্ঠ পুত্র বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজ সেবক জনাব আলহাজ্ব শামসুর রহমান সাহেব প্রতিষ্ঠানটির জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সাহায্য দিয়ে উপরোক্ত সকল সমস্যা সমাধানের সদিচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু তার দান বা সহযোগিতা আমরা কিভাবে গ্রহণ করব? তার দান প্রাপ্তির কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকার। যেমন দাতার দান গ্রহণ করে নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা উল্লেখযোগ্য দিক হতে পারে। কিন্তু সরকারের প্রচলিত বিধি মোতবেক প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে কোন দাতার নামে নামকরণ করতে হলে কমপক্ষে ১৫,০০,০০০/— (পনের লক্ষ) টাকা দান করতে হবে। আমার বিশ্বাস জনাব আলহাজ্ব শামসুর রহমান আরো বেশি অংকের আর্থিক সহযোগিতা করাসহ কলেজটির উন্নতির সর্বাবিধ দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। যেমন—ইতোমধ্যে তিনি কলেজটির জন্য টাইপরাইটার, ফ্যাক্স ইত্যাদির ব্যবস্থা করেছেন।
অতএব, তার দান গ্রহণের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে তাহার নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা যেতে পারে। পক্ষান্তরে এতদসংক্রান্ত ব্যাপারে জনমত যাচাইয়ের জন্য ০৭/১২/১৯৯২ ইং তারিখের সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উক্ত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে জনমত যাচায়ের জন্য মহাবিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবনে ২৭/০১/১৯৯৩ তারিখে সকাল ১১ ঘটিকায় সর্বস্তরের জনসাধারণের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে দাতার নামে প্রতিষ্ঠানের নামকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উক্ত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাতার দান গ্রহণের উপায় ও প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের নীতি ও কৌশল নির্ধারণের জন্য নিম্নলিখিত ০৬ (ছয়) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
১. জনাব আবদুর রাজ্জাক এম.পি শরীয়তপুর—০৩
২. জনাব মোল্লা তবিবুর রহমান, থানা নির্বাহী অফিসার, গোসাইরহাট
৩. জনাব ডাঃ এ, এস, কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রাক্তন উপজেলা চেয়ারম্যান, গোসাইরহাট
৪. জনাব এম.এম. আলী আহমেদ, এ্যাডভোকেট
৫. জনাব শেখ আবুল হোসেন, এ্যাডভোকেট
৬. জনাব আবু মোঃ মোখলেছুর রহমান, অধ্যক্ষ ও সদস্য সচিব।
উক্ত সাধারণ সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয় যে, দাতার দানকৃত অর্থ ব্যয় করার জন্য উপরোক্ত কমিটি একটি মাস্টার প্লান প্রণয়ন করেন। অত্র মহাবিদ্যালয়ের আর্থিক দৈন্যতা ও সার্বিক উন্নয়নের প্রয়োজনে দীর্ঘসূত্রিতার আলাপ-আলোচনা ও কার্যপ্রণালিতে দাতার দান গ্রহণ করার জন্য স্থানীয় জনসাধারণ, নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও কলেজ কতৃর্পক্ষ সম্পূর্ণরূপে যেহেতু মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন সেহেতু অদ্যকার সভায় উপস্থিত সদস্য মহোদয়গণের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করে ০২ নং আলোচ্য বিষয় কলেজের নামকরণ প্রসঙ্গে গঠনমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার অনুরোধ করা হয়।
সম্মানিত অধ্যক্ষ আবু মোঃ মোখলেছুর রহমান সাহেবের বক্তব্যের শেষে সভাপতি মহোদয়ের অনুরোধক্রমে গর্ভনিং বডির সদস্য জনাব সাহেদ পারভেজ আব্বাস বলেন, কলেজের নামকরণ করার ব্যাপারে গর্ভনিং বডির ২৩/০৮/১৯৯২ ইং তারিখের সভার সিদ্ধান্ত নং ৮(ক)—এ সিদ্ধান্ত হয় যে, দাতার নামে কলেজটির নামকরণ করা হবে। তবে ইদিলপুর শব্দটি সর্বাগ্রে থাকতে হবে। সুতরাং অদ্যকার সভায় পুনরায় একই বিষয়ের সিদ্ধান্তের জন্য আলোচ্য বিষয়ের কি প্রয়োজন ছিল? তাহার বক্তব্যের জবাবে সদস্য—সচিব অধ্যক্ষ আবু মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান সভায় ব্যক্ত করেন যে, দাতা ইদিলপুর শব্দটি মহাবিদ্যালয়ের নামকরণের বেলায় দাতার নামের পরে প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করেছেন। অতঃপর সভায় সম্মানিত সভাপতি ২৭/০১/১৯৯৩ তারিখের সাধারণ সভায় গঠিত বিশেষ কমিটি এতদসংক্রান্ত ব্যাপারে কি মতামত ব্যক্ত বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তা সদস্য—সচিব অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট জানতে চান। অধ্যক্ষ মহোদয় জানান যে, বিশেষ কমিটি দাতার দান গ্রহণ করে মহাবিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার জন্য সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। কিন্তু কি নামকরণ হবে তা স্পষ্ট করে বলে না দিলেও বিশেষ কমিটি কোন নামেই কোন আপত্তি প্রকাশ করেননি। অর্থাৎ দাতার নামের আগে কিংবা পরে ইদিলপুর নামটি ব্যবহারের জন্য বিশেষ কমিটির কোন আপত্তির কিছুই নেই। দাতার প্রস্তাবিত কোন নামেই বিশেষ কমিটির কোনরূপ অসম্মতি নেই।
অধক্ষ সাহেবের বক্তব্য শেষে দাতার প্রস্তাব অনুসারে ১৯/০৫/১৯৯৩ ইং তারিখের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে দাতার নামের পরে ইদিলপুর শব্দটি প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অর্থাৎ সভা সিদ্ধান্ত নেয় যে, ইদিলপুর মহাবিদ্যালয় নামের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানটির নতুন নাম হবে শামসুর রহমান কলেজ, ইদিলপুর, গোসাইরহাট, শরীয়তপুর।
গর্ভনিং বডির কলেজের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত স্মারক নং— ইম ১০৭(১)৯৩ তাং ১৮/০৮/১৯৯৩ এর মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী হাটুরিয়া মিয়া বাড়ীর কৃতি সন্তান দানবীর বিদ্যোৎসাহী মানব—দরদী বিশিষ্ট শিল্পপতি, সমাজসেবক আলহাজ্ব শামসুর রহমান (শাহজাদা মিয়া) কে অবগত করেন। উক্ত প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জনাব শামসুর রহমান সরকারি বিধি মোতাবেক এককালীন ১৫,০০,০০০/— (পনের লাখ) টাকার চেক যাহার নং ১৭২৯৫ তারিখ: ০২/০৯/১৯৯৩, অগ্রণী ব্যাংক রমনা শাখা, হিসাব নং—৩৩০৭২৮৪৪ এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট হস্তান্তর করেন যা পরবতীর্তে কলেজ হিসাব, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, গোসাইরহাট শাখায় জমা করা হয়। উক্ত চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে জনাব ডাঃ এ.এস. কামাল উদ্দিন আহমেদ, জনাব আবদুল গণি সরদার, জনাব জসীম উদ্দীন দেওয়ান, জনাব আবদুল কাইয়ুম, জনাব মোঃ মতিউর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে গণপ্রজতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং শা ৯৫ এ—২/৯০/৫৩৮/১(৭) শিক্ষা, তারিখ: ২৮/০৬/১৯৯৪ ইং এ কলেজ পরিচালনার আর্থিক দায়িত্বভার গ্রহণ করে আলহাজ্ব শামসুর রহমান কলেজ, নামকরণ করেন।
কলেজ পরিচালনার আর্থিক দায়িত্বভার গ্রহণ করে আলহাজ্ব শামসুর রহমান সাহেব কলেজের লেখাপড়া ও অবকাঠামো উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন। তিনি প্রথমেই উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিভাগ ও বাণিজ্য বিভাগে শর্টহ্যান্ড টাইপ বিষয় চালুকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। কলেজটিকে দেশের বৃহত্তম স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ব্রত নিয়ে তিনি নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজ মেধা, শ্রম, অর্থ অকাতরে বিলিয়েছেন। উল্লেখ্য এককালীন অনুদানের ১৫,০০,০০০/— (পনের লাখ) টাকা প্রদানের পরেও জনাব মোঃ শামসুর রহমান সাহেব ২০১৩ সন পর্যন্ত শিক্ষক—কর্মচারীদের বেতন ভাতা কলেজের দৈনন্দিন খরচ ও উন্নয়ন কাজের যাবতীয় অর্থ নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদান করেন। তিনি নিজ অর্থায়নে ২,৮৫,০০,০০০/— (দুই কোটি পঁচাশি লাখ) টাকা ব্যয়ে একটি পাঁচতলা বিশিষ্ট খলিলুর রহমান অনার্স ভবন নির্মাণ করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি স্নাতক (পাস) স্তরে বিএ, বিএসএস বি.বি.এস ও বি.এস.সি কোর্স এবং হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থপনা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, বাংলা, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করেছেন।
তিনি হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাষ্টার্স প্রথম পর্ব ও শেষ পর্ব (রেগুলার ও প্রাইভেট) চালু করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীন ব্যবসায় ম্যানেজমেন্ট শাখা এবং উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ের এইচএসসি প্রোগ্রাম চালু করেছেন। যার ফলে এলাকার সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা নিজ বাসায় থেকে স্বল্প খরচে উচ্চ শিক্ষা লাভ করছে।
জনাব শামসুর রহমান ব্যক্তি জীবনে একজন সদাচারী, বিনয়ী সাদামনের মানুষ এবং একজন সফল পিতা ও শিল্পপতি। তার ০৩ ছেলে ও ০২ কন্যা যারা উচ্চ শিক্ষিত এবং শিল্পপতি হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত। কলেজের উন্নয়নে শামসুর রহমান সাহেবের ছোট ভাই মেজর (অবঃ) আনিসুর রহমান সাহেবের অবস্থান সুপ্রতিষ্ঠিত। তাই জনাব আনিসুর রহমান সাহেবকে গভর্ণিং বডির আজীবন দাতা সদস্য, বড় ছেলে জনাব জিয়াউর রহমান আহাদ মিয়া, ছোট ছেলে জনাব আসিফুর রহমান শিহাব মিয়া কলেজের উন্নয়নে লক্ষ লক্ষ টাকা অকাতরে ব্যয় করেছেন। তাই জনাব জিয়াউর রহমান আহাদ মিয়াকে গভর্ণিং বডির হিতৈষী সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
দৃষ্টিনন্দন অডিটোরিয়াম, অনার্স ভবন, বিজ্ঞান ভবন, আই.সি. টি ভবন, কলেজ ক্যান্টিন, ছাত্রাবাস, শিক্ষক ডরমেটরি। কলেজটি জাতীয়করণ তালিকাভুক্ত হওয়ার কলেজ পরিবার ও শামসুর রহমান সাহেব সহ তাঁর পরিবারের সকল সদস্য সদাসয় সরকার প্রধানের নিকট কৃতজ্ঞ। কলেজের লেখাপড়ার মান, পরিবেশ, অবকাঠামো উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে যাতে করে এলাকার আপামর জনসাধারণ স্বল্প খরচে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে পারে এই আমাদের প্রত্যাশা।
৭.৪* হস্তান্তরের উদ্দেশ্য :—
প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ জাতীয়করণ করা হবে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গত ২৮ জুন ২০১৬ খ্রি: তারিখে স্মারক নং ০৩.০০১.০০০.০০.০০.০১.২০১৬—৩২ এর মাধ্যমে শামসুর রহমান কলেজ, গোসাইরহাট, শরীয়তপুরকে সরকারিকরণের প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়কে অনুরোধ করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার প্রেক্ষাপটে কলেজটি জাতীয়করণ হচ্ছে বিধায় এলাকাবাসীসহ সকল শিক্ষানুগারী সবিশেষ আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। কলেজটি জাতীয়করণের লক্ষ্যে— শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৭০.০২.০৪৪.২০১৬—৭২৩, তারিখঃ ৩০ জুন ২০১৬ খ্রি:, মাউশি অধিদপ্তরের স্মারক নং ৭এ/০৯/সি—২/২০১৩/৫৬৩৯ (ক)/৫, তারিখ ঃ ৩০/০৬/২০১৬ খ্রি:, মাউশি অধিদপ্তর ঢাকা অঞ্চল স্মারক নং ৩৭.০২.০০০০.১০৩.৪৩.০৫০.২০১৬—৫৭৮৬ তারিখ ঃ ঃ ১১ আগস্ট ২০১৬ খ্রি:, মাউশি/ঢাঅ—১১৯/জাতীয়/পরিঃ/কলেজ/২০১৬/১৩৭৯—এ , তারিখঃ ১৮/০৮/২০১৬ খ্রি:, এর প্রেক্ষিতে গত ২১/০৮/২০১৬ খ্রিঃ তারিখে মাউশি কর্মকর্তাগণ পরিদর্শনে আসেন। তাদের পরিদর্শন প্রতিবেদন—এর প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের স্মারক নং ০৫.৩০.৮৬৩৬.০০০.২৫.০০১.১৭ এর প্রেক্ষিতে কলেজের যাবতীয় স্থাবর—অস্থাবর সম্পত্তি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর অনুকূলে দানপত্র রেজিস্ট্রি হওয়া বিধেয়, বিধায় অত্র দলিলের দ্বারা কলেজের মালিকানাধীণ সকল সম্পত্তি হস্তান্তর করা অপরিহার্য। সে কারণে কলেজ গভর্ণিং বডি গত ২৩/০৫/২০১৭ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত ১০২ নং সভার ০২ সিদ্ধান্ত মোতাবেক উক্ত দানপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে সকল আপত্তি হস্তান্তরের নিমিত্ত্বে শামসুর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি গভর্ণিং বডি জনাব আলহাজ¦ শামসুর রহমান এবং অধ্যক্ষ জনাব মোঃ মৌজে আলী হাওলাদরকে ক্ষমতা সর্বসম্মতিক্রমে প্রদান করেন।
ক্স সম্পত্তির দখল, ইজমেন্ট স্বত্ব এবং হস্তান্তর সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য মন্তব্য (যদি থাকে) ঃ প্রযোজ্য নহে।
৮. একাধিক গ্রহিতা/গ্রহিতারগণের ক্ষেত্রে অর্জিত সম্পত্তির হারাহারি মালিকানার বিবরণ ঃ প্রযোজ্য নহে।
৯. একাধিক দাতা/দাতাগণের ক্ষেত্রে হস্তান্তরিত সম্পত্তির মালিকানার বিবরণ : প্রযোজন্য নহে।
বাংলা : ১৮ই জৈষ্ঠ ১৪২৪ বাংলা
ইংরেজি : ০১/০৬/১৭ ইং এক ছয় দুই হাজার সতের সন।